📜 Madhyamik History Chapter 6 Notes in bengali: অধ্যায় ৬: কৃষক-শ্রমিক-বামপন্থী আন্দোলন

📜 Madhyamik History Chapter 6 Notes in Bengali: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস কেবল একটি ধারায় বয়ে যায়নি। জাতীয় কংগ্রেসের পাশাপাশি, বিশ শতকের ভারত দেখেছিল সাধারণ কৃষক, কারখানার শ্রমিক আর নতুন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখা বামপন্থী ভাবধারার মানুষদের গর্জে উঠতে। তাদের সম্মিলিত শক্তি ব্রিটিশ শাসনের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল। সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরের মানুষ জড়িয়ে পড়েছিল অধিকার আদায়ের এই নানা লড়াইয়ে। এই অধ্যায়ে আমরা সেইসব রোমাঞ্চকর গণআন্দোলনের গভীরে প্রবেশ করব।

এই অধ্যায়ে আমরা জানব (এক ঝলকে):

• 🌾 কৃষক বিদ্রোহ: কেন তারা লড়েছিল? প্রধান আন্দোলন কোনগুলি ছিল? জাতীয় রাজনীতির সাথে তাদের যোগ কেমন ছিল?
• 🏭 শ্রমিক জাগরণ: কীভাবে তৈরি হল ট্রেড ইউনিয়ন? তাদের প্রধান ধর্মঘট ও লড়াইগুলি কী ছিল?
• ☭ বামপন্থার জন্ম: ভারতে কীভাবে এল এই নতুন মতাদর্শ? কোন দল তৈরি হল? স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের ভূমিকাই বা কী ছিল?

গুরুত্ব: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সম্পূর্ণ ছবিটি বুঝতে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এই অধ্যায়টি অপরিহার্য।

---

🌾 মাটির অধিকার, মাটির লড়াই: কৃষক আন্দোলন (Madhyamik History Chapter 6 Notes)

📜 প্রেক্ষাপট: কেন কৃষকরা ক্ষুব্ধ ছিল?

ব্রিটিশ শাসন মানেই ছিল কৃষকদের উপর সীমাহীন শোষণ – অত্যধিক খাজনা, জমিদার-মহাজনদের অত্যাচার আর ঋণের নাগপাশ। গান্ধিজির নেতৃত্বে চম্পারণ (১৯১৭) ও খেড়া (১৯১৮) সত্যাগ্রহ আঞ্চলিক স্তরে পথ দেখালেও, দেশ জুড়ে কৃষকদের সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল। অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০) সেই সুযোগ এনে দেয়। এরপর ১৯২৯ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা কৃষকদের অবস্থা আরও খারাপ করে তোলে। এই পটভূমিতেই জন্ম নেয় বিভিন্ন প্রাদেশিক কিষান সভা, যা অবশেষে ১৯৩৬ সালে লখনউতে সারাভারত কিষান কংগ্রেস (পরে ‘সভা’) গঠনে সাহায্য করে। স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী (প্রথম সভাপতি) ও এন. জি. রঙ্গ (প্রথম সম্পাদক) ছিলেন এর প্রধান কান্ডারী।

কিষান সভার প্রধান দাবিগুলো কী ছিল?

• 📜 জমিদারি প্রথার সম্পূর্ণ অবসান।
• 📉 ভূমিরাজস্বের হার অন্তত ৫০% কমানো।
• 💸 কৃষিঋণ মকুব।
• 🚫 বেগার প্রথার উচ্ছেদ।
• 🌳 পতিত ও খাসজমি কৃষকদের মধ্যে বিতরণ।
• 💰 কৃষিশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ।
• 🌲 বনজ সম্পদে কৃষকদের চিরাচরিত অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।

🔥 জাতীয় আন্দোলনের আবহে প্রধান কৃষক বিদ্রোহ

• অসহযোগ পর্ব (১৯২০-২২): গণজাগরণের ঢেউ
  • বিহার: স্বামী বিদ্যানন্দের নেতৃত্বে দ্বারভাঙ্গা, ভাগলপুরে অধিকারের লড়াই।
  • যুক্তপ্রদেশ (উত্তরপ্রদেশ):
    • বাবা রামচন্দ্রের নেতৃত্বে অযোধ্যা অঞ্চলে তীব্র আন্দোলন, ‘অযোধ্যা কিষান সভা’ গঠন। খাজনা বন্ধ ও জমিদার বয়কটের ডাক। তাঁর গ্রেফতারির প্রতিবাদে হাজার হাজার কৃষকের বিক্ষোভে সরকার মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পরে আন্দোলন হিংসাত্মক হলে কংগ্রেস সমর্থন তুলে নেয়। এর ফলেই ‘অযোধ্যা খাজনা আইন’ (১৯২১) পাস হয়।
    • একা আন্দোলন (১৯২১-২২): হরদৈ, বাহরাইচ, সীতাপুর অঞ্চলে মাদারী পাসির নেতৃত্বে কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ শপথ (বেশি খাজনা নয়, বেগার শ্রম নয়, উৎখাত মানব না)। আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠলে সরকারি দমনে স্তব্ধ হয়।
  • বাংলা: ‘দেশপ্রাণ’ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের নেতৃত্বে মেদিনীপুরের কাঁথি-তমলুকে চৌকিদারি কর বিরোধী সফল আন্দোলন।
  • দক্ষিণ ভারত: কেরালার মালাবারে মোপলা বিদ্রোহ (১৯২১) – জমিদার ও ব্রিটিশ বিরোধী মুসলিম কৃষকদের জোরালো সংগ্রাম। অন্ধ্রপ্রদেশে আল্লুরি সীতারাম রাজুর নেতৃত্বে রম্পা বিদ্রোহ (১৯২২-২৪) – মহাজনী শোষণ ও বন আইনের বিরুদ্ধে উপজাতিদের লড়াই।
• ✅ বারদৌলি সত্যাগ্রহ (১৯২৮): অহিংস প্রতিরোধের শিখর
  • কোথায় ও কেন?: গুজরাটের বারদৌলিতে সরকার ২২% রাজস্ব বৃদ্ধি করলে কৃষকরা খাজনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
  • নেতৃত্ব: 🦸 সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল (মূল নেতা)। এই আন্দোলনের সময়েই স্থানীয় মহিলারা তাঁকে ‘সর্দার’ উপাধি দেন। ‘কালিপরাজ’ ও ‘উজলিপরাজ’ উভয় সম্প্রদায়ই যোগ দেয়।
  • বিশেষত্ব: সম্পূর্ণ অহিংস, শপথ গ্রহণ, হিন্দু-মুসলিম ঐক্য, মহিলাদের (মিঠুবেন পেটিট, মণি বেন প্যাটেল প্রমুখ) ও ছাত্রদের ব্যাপক অংশগ্রহণ।
  • ফলাফল: সরকার ব্লুমফিল্ড-ম্যাক্সওয়েল তদন্ত কমিটি বসাতে বাধ্য হয় এবং খাজনার হার কমিয়ে প্রায় ৬% করে। কৃষকদের বিরাট জয়!
• আইন অমান্য পর্ব (১৯৩০-৩৪): মন্দা ও প্রতিরোধ
  • অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কৃষিপণ্যের দাম তলানিতে, কিন্তু খাজনা কমেনি। ফলে উত্তরপ্রদেশ, বাংলা, দক্ষিণ ভারত সহ সর্বত্র খাজনা বন্ধের আন্দোলন তীব্র হয়।
• ভারত ছাড়ো পর্ব (১৯৪২): ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’
  • শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের পর কৃষকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেদিনীপুরে (তমলুক, কাঁথি), বিহারে, যুক্তপ্রদেশে (বালিয়া, গাজিপুর), ওড়িশায় (কোরাপুটে লক্ষণ নায়েকের নেতৃত্বে, তালচেরে ‘চাষি-মল্লা রাজ’), মহারাষ্ট্রে (সাতারার কুনবি কৃষক) – সর্বত্র তাদের অসামান্য লড়াই ব্রিটিশ প্রশাসনকে নাড়িয়ে দেয়।
• স্বাধীনতা পূর্ববর্তী শেষ লড়াইগুলো: বাংলার তেভাগা আন্দোলন (১৯৪৬) (ফসলের ২/৩ ভাগ পাওয়ার দাবিতে ভাগচাষিদের সংগ্রাম, স্লোগান: ‘তেভাগা চাই’, ‘নিজ খামারে ধান তোলো’), কেরালার পুন্নাপ্রা-ভায়লার গণসংগ্রাম (১৯৪৬), হায়দ্রাবাদের তেলেঙ্গানা কৃষক বিদ্রোহ (১৯৪৬-৫১)।

(💡 পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি): একা আন্দোলন, বারদৌলি সত্যাগ্রহ, সারা ভারত কিষান সভা, বাবা রামচন্দ্র, মাদারী পাশি, বীরেন্দ্রনাথ শাসমল, তেভাগা আন্দোলন।

---

🏭যন্ত্র যখন গর্জে ওঠে: শ্রমিক আন্দোলন (Madhyamik History Chapter 6 Notes)

📜 প্রেক্ষাপট: শ্রমিক অসন্তোষের কারণ

বিশ শতকের শুরুতে কলকারখানার শ্রমিকদের জীবন ছিল অত্যন্ত কষ্টের – কম বেতন, বেশি সময় কাজ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, মালিকের অত্যাচার। বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে (১৯০৫) প্রথম রাজনৈতিক চেতনার প্রকাশ ঘটে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধর্মঘট হয়। ১৯০৮ সালে টিলকের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বোম্বাইয়ে শ্রমিকদের ধর্মঘট ছিল গুরুত্বপূর্ণ মোড়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও রুশ বিপ্লব তাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করে।

✊ ইউনিয়ন গঠন: ঐক্যের পথে যাত্রা

• প্রথম পদক্ষেপ: ১৯১৮ সালে মাদ্রাজে বি. পি. ওয়াদিয়ার নেতৃত্বে ‘মাদ্রাজ লেবার ইউনিয়ন’ প্রতিষ্ঠা।
• সর্বভারতীয় মঞ্চ: ১৯২০ সালের ৩১ অক্টোবর বোম্বাইয়ে গঠিত হয় ‘নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস’ (AITUC)। প্রথম সভাপতি ছিলেন লালা লাজপত রায়। প্রতিষ্ঠাতা মণ্ডলীর মধ্যে ছিলেন এন. এম. যোশী, দেওয়ান চমনলাল প্রমুখ। দেশের ১২৫টি শ্রমিক সংগঠন এতে যোগ দেয়।

🔥 প্রধান আন্দোলন ও ঘটনাপ্রবাহ

• অসহযোগ পর্ব (১৯২০-২২): ধর্মঘটের ঢেউ আছড়ে পড়ে সারা ভারতে। কলকাতা, বোম্বাই, জামশেদপুর, আসাম – সর্বত্র শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধি, ছাঁটাই বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়। প্রিন্স অফ ওয়েলসের আগমনের দিন দেশব্যাপী ধর্মঘট পালিত হয় (১৯২১)।
• বামপন্থার প্রভাব বৃদ্ধি (১৯২৩-২৮):
  • মাদ্রাজে সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ারের নেতৃত্বে প্রথম মে দিবস পালন (১৯২৩)।
  • ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ (WPP) গঠন।
  • বোম্বাইয়ে এস. এ. ডাঙ্গের নেতৃত্বে ‘গিরনি কামগড় ইউনিয়ন’ গঠন (১৯২৮) ও তার নেতৃত্বে ৬ মাস ব্যাপী ঐতিহাসিক বস্ত্রশিল্প ধর্মঘট।
• আইন অমান্য পর্ব (১৯৩০-৩৪):
  • বোম্বাইয়ের GIP রেল শ্রমিকদের সত্যাগ্রহ।
  • শোলাপুরে গান্ধিজির গ্রেফতারের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিদ্রোহ, থানা-আদালত আক্রমণ ও শেষে নির্মম সামরিক দমন (১৯৩০)।
  • AITUC-র মধ্যে বিভাজন আন্দোলনকে কিছুটা দুর্বল করে দেয় (ITUF ও RTUC গঠন)।
• ভারত ছাড়ো পর্ব (১৯৪২):
  • কমিউনিস্ট পার্টির বিরোধিতা সত্ত্বেও জামশেদপুর (টাটা স্টিল ১৩ দিন বন্ধ), আমেদাবাদ (বস্ত্র কারখানা সাড়ে ৩ মাস বন্ধ), কলকাতা (ট্রাম ধর্মঘট) সহ সর্বত্র শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দেয়।

(💡 পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি): AITUC প্রতিষ্ঠা ও প্রথম সভাপতি, মাদ্রাজ লেবার ইউনিয়ন, ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি, গিরনি কামগড় ইউনিয়ন, শোলাপুর ঘটনা (১৯৩০), ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা।

---

☭ নতুন পথের সন্ধানে: বামপন্থী আন্দোলন (Madhyamik History Chapter 6 Notes)

📜 ভাবাদর্শের আগমন ও মূল ভাবনা

রুশ বিপ্লবের (১৯১৭) সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ভারতেও সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষকের মুক্তির লক্ষ্যে বামপন্থী মতাদর্শের প্রসার ঘটে। এই মতাদর্শ কংগ্রেসের নরমপন্থী বা আপসমূলক নীতির সমালোচক ছিল।

🚩 প্রধান দল ও সংগঠন

• ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (CPI): প্রথম প্রতিষ্ঠা রাশিয়ার তাসখন্দে (১৯২০), প্রধান উদ্যোক্তা মানবেন্দ্রনাথ রায় (এম. এন. রায়)। ভারতে আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা কানপুরে (১৯২৫), প্রথম সাধারণ সম্পাদক এস. ভি. ঘাটে। ‘দ্বিজ’ নামে পরিচিত।
• ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি (WPP): (১৯২৫-২৮) কমিউনিস্টদের প্রকাশ্য মঞ্চ। বাংলায় সূচনা ‘লেবার স্বরাজ পার্টি’ নামে (প্রতিষ্ঠাতা: কাজী নজরুল ইসলাম, মুজফ্ফর আহমেদ প্রমুখ)। মুখপত্র: ‘লাঙল’, ‘গণবাণী’।
• কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল (CSP): (১৯৩৪) কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সমাজতন্ত্রীদের মঞ্চ। নেতা: জয়প্রকাশ নারায়ণ, আচার্য নরেন্দ্র দেব, রামমনোহর লোহিয়া প্রমুখ।
• ফরওয়ার্ড ব্লক: (১৯৩৯) সুভাষচন্দ্র বসু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত।

🔥 কার্যকলাপ, কৌশল ও সরকারি দমন নীতি

• কৌশল ও প্রচার: দ্বৈত নীতি (কংগ্রেসের সাথে ও গোপনে নিজস্ব সংগঠন), পত্রপত্রিকার মাধ্যমে প্রচার (‘দ্য সোশ্যালিস্ট’, ‘লাঙল’, ‘গণবাণী’, ‘লেবার কিষান গেজেট’ ইত্যাদি)।
• আন্দোলন: শ্রমিক ধর্মঘট, কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করা, সাইমন কমিশন বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ।
• সরকারি দমন: শুরু থেকেই ব্রিটিশ সরকার বামপন্থীদের রুখতে সচেষ্ট ছিল।
  • ষড়যন্ত্র মামলা: পেশোয়ার (১৯২৩), কানপুর (১৯২৪), মিরাট (১৯২৯-৩৩)। মিরাট মামলায় ৩৩ জন নেতা (৩ জন ব্রিটিশ সহ) গ্রেফতার ও দণ্ডিত হন, যা আন্দোলনকে সাময়িকভাবে দুর্বল করে।
  • আইন: ‘শিল্পবিরোধ বিল’, ‘জননিরাপত্তা বিল’ (১৯২৮)।
  • দল নিষিদ্ধ: CPI নিষিদ্ধ ঘোষণা (১৯৩৪-১৯৪২)।
• 🔄 দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পরিবর্তিত অবস্থান:
  • যুদ্ধকে প্রথমে ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ’ বলে বিরোধিতা।
  • জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করলে (১৯৪১) নীতি পরিবর্তন করে ‘জনযুদ্ধ’ আখ্যা এবং ব্রিটিশ সরকারকে সমর্থন। (‘Jail Document’)।
  • সরকার CPI-এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় (১৯৪২)।
• 🇮🇳 ভারত ছাড়ো আন্দোলন (১৯৪২) ও বামপন্থীরা:
  • ‘জনযুদ্ধ’ নীতির কারণে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের তীব্র বিরোধিতা ও ব্রিটিশ সরকারকে সহযোগিতা। এই কারণে জাতীয়তাবাদী মহলে তীব্রভাবে সমালোচিত।
• 👤 মানবেন্দ্রনাথ রায় (এম. এন. রায়): এক বিতর্কিত পথপ্রদর্শক:
  • প্রকৃত নাম নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রধান স্থপতি। তাসখন্দে CPI প্রতিষ্ঠা। কমিন্টার্নে অংশগ্রহণ। গ্রন্থ: ‘India in Transition’।
• যুদ্ধোত্তর পুনরুত্থান: বিতর্কিত ভূমিকা সত্ত্বেও যুদ্ধের পর তেভাগা, পুন্নাপ্রা-ভায়লার, তেলেঙ্গানার মতো শক্তিশালী আন্দোলনে নেতৃত্বদান এবং শ্রমিক-কৃষক মহলে প্রভাব বৃদ্ধি।

(💡 পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি): CPI প্রতিষ্ঠা (তাসখন্দ ও কানপুর), CSP প্রতিষ্ঠা ও নেতা, WPP ও তার মুখপত্র, মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা, মানবেন্দ্রনাথ রায়ের অবদান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ভারত ছাড়ো আন্দোলনে কমিউনিস্টদের ভূমিকা।

---

⏳অধ্যায়ের টাইমলাইন: এক নজরে গুরুত্বপূর্ণ সাল

---

🏁উপসংহার: বহু স্রোতের মোহনায় স্বাধীনতা

বিশ শতকের ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল এক বিশাল সমুদ্রের মতো, যেখানে মিশেছিল নানা স্রোত। জাতীয় কংগ্রেসের পাশাপাশি কৃষক, শ্রমিক এবং বামপন্থী শক্তিগুলির অবদান অনস্বীকার্য। তাদের সম্মিলিত লড়াই, ত্যাগ আর স্বপ্নই স্বাধীনতার পথ খুলে দিয়েছিল। এই অধ্যায় আমাদের সেই বহুস্বরিক, গৌরবময় ইতিহাসের পাঠ দেয়।